মহানগর ২ আরো বোল্ড, আরো এলিগেন্ট!

আশফাক নিপুণ এই সিরিজের প্রথম সিজন বানানোর পর আমার ধারণা ছিল, পরের সিজনে উনি অতটা সাহসী বা সমসাময়িক হতে পারবেন না। ধারণা ভুল প্রমাণ করে নিপুণ সিজন টু কে করেছেন আরো বোল্ড, আরো এলিগেন্ট!

মহানগর ২ আরো বোল্ড, আরো এলিগেন্ট!

আশফাক নিপুণ এই সিরিজের প্রথম সিজন বানানোর পর আমার ধারণা ছিল, পরের সিজনে উনি অতটা সাহসী বা সমসাময়িক হতে পারবেন না। ধারণা ভুল প্রমাণ করে নিপুণ সিজন টু কে করেছেন আরো বোল্ড, আরো এলিগেন্ট! কলকাতার রিভিউয়াররা তাদের মতামত দিয়েছে। সেটা নেগেটিভ হলেও ভ্রু কুঁচকানোর কিছু নেই, পজিটিভ হলেও খুব লাফানোর কিছু নেই। বিপুল জনপ্রিয় একটা শো এরকম মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাবেই।

যাই হোক, দ্বিতীয় সিজন আমার কাছে ভাল লেগেছে। তুলনা করছি না, তবে প্রথম সিজন যেখানে অনেক এঙ্গেইজড, এবার অনেকটাই ফ্লাডেড! সেক্ষেত্রে ৯টা পর্ব অবশ্যই বেশি হয়েছে, প্যারালাল ঘটনাগুলো দেখানোর ট্রিটমেন্ট একটু ইমব্যালান্সড। 

গত সিজনের পর ওসি হারুনকে ধরা হয়েছে। আফনান চৌধুরী থানায় পুরো একটা রাত কাটানো ও মলয়ের অভিযোগে হারুন ধরা পড়ে। তাকে একটা জায়গায় এনে ইন্টারোগেট করছে সরকারের সার্ভেইলেন্স টিমের কয়েকজন। হারুন তার পূর্বতর কাজের হিসাব দিতে গিয়ে কয়েকবছর আগে হওয়া একটা রাজনৈতিকভাবে জটিল কেস নিয়ে বয়ান দিতে থাকে। এর পাশাপাশি চলে আফনান চৌধুরীর নিজের গা বাঁচানোর তোড়জোড়!

বাংলাদেশে আমরা চোখের সামনে অনেক ঘটনা দেখি বা শুনি যা আমরা একে অন্যকে বলতে বা তৎসমুখে প্রতিবাদ করতে পারি না। এই না পারার অস্বস্তি আমাদের মত অনেকেই বুঝবে না, এমনকি কলকাতার রিভিউয়াররাও না। নিপুণ খুব সতর্কভাবেই ঘটনাগুলো নোট নিয়েছেন এবং চরিত্রের মুখ দিয়ে বলিয়েছেন। সাবপ্লটে জোর করে ইনহেল করা কিছু এলিমেন্ট বাদ দিলে ফ্ল্যাশব্যাক বেশ গোছানো। তবে ডায়লগের আধিক্য ভিজ্যুয়াল থেকে বেশি হওয়ায় অনেক জায়গায় দর্শককে নিজের কল্পনার ওপরই ভরসা করতে হয়।

মোশাররফ করিম প্রথম সিজনে অনেক জায়গায় আড়ষ্ট থাকলেও এবার সাবলীল ছিলেন, বেশ ভাল করেছেন। ফজলুর রহমান বাবু চরিত্রের ভারিক্কিটা রাখতে পারেন নি। আফসানা মিমি অসাধারণ, তানজিকা খুব ভাল, দিব্যও তাই। শ্যামল মাওলার এক্টিভিটির ইমপ্যাক্ট কম তবে আফনান ক্যারেক্টার তিনি ভাল ক্যারি করেছেন। নাফিসকে দেখে চমকে গেছি আর ক্যামিও রোলটা না বলি এখন।

নেগেটিভ দিক কয়েকটা বলে ফেলেছি। সাথে যোগ করেন কয়েকটা অসামঞ্জস্যতা। সারভেইলেন্স এর জায়গায় যে কড়াকড়ি দেখানো হলো শুরুতে, ওয়াশরুমে এতবার গিয়ে হারুনের কথা বলায় সেটা পড়ে গেছে। ওখানে থাকা ব্যবসায়ীকে ধরে আনার কারনটা স্পষ্ট না। বৃন্দাবন দাসের ক্যারেক্টারটা ততটাও প্রফেশনাল মনে হলো না। 

'মহানগর' এবারও নগরের ভূত, সিস্টেমের প্যাচ আর রাজনীতির সত্য মিথ্যা নিয়ে বলেছে। সেদিক থেকে পরের অংশ দেখার আগ্রহ নিয়ে বসে থাকার যৌক্তিকতা থেকে যায়।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow