শিহাব শাহীনের 'মায়াশালিক' রিভিউ
"স্বর্গে ছেলে আর মেয়েকে জোড়ায় জোড়ায় বানানো হয়, তারপর তাদের পৃথিবীতে পাঠানোর আগে একটা নকশাকে দু’ভাগ করে দুজনকে অর্ধেক অর্ধেক দিয়ে দেয়া হয়। পৃথিবীতে তারা সারাজীবন বাকি অর্ধেক নকশা খুঁজতে থাকে! "
"স্বর্গে ছেলে আর মেয়েকে জোড়ায় জোড়ায় বানানো হয়, তারপর তাদের পৃথিবীতে পাঠানোর আগে একটা নকশাকে দু’ভাগ করে দুজনকে অর্ধেক অর্ধেক দিয়ে দেয়া হয়। পৃথিবীতে তারা সারাজীবন বাকি অর্ধেক নকশা খুঁজতে থাকে! "
ফ্যান্টাসি কিন্তু সত্য, এমনই সংলাপের মাধ্যমে শিহাব শাহীনের 'মায়াশালিক' এর ট্রেলার বের হয়েছিল। মূলত এই সংলাপটিই আমায় বাধ্য করেছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জে তে মুক্তি পাওয়া ওয়েব ফিল্ম 'মায়াশালিক'।
গল্পে দেখা যায়, অভি একটা সময় সেনাবাহিনীতে কর্মরত থাকলেও সম্প্রতি চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে উপন্যাস লিখবে দেখে শহর ছেড়ে যায় মোর্শেদপুর গ্রামে। বাড়িওয়ালা ইউকে চলে যাবে দেখে ভাড়াটিয়া অভিকে সব বুঝিয়ে দিয়ে যায়। হঠাৎ একদিন দুপুরে ল্যান্ডলাইনে ফোন আসে। অভির সাথে কথোপকথন হয় অচেনা সারার সাথে। টিনএজ সারার জোড়েই বলা যায় অচেনা নাম্বারে পরিচয় থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়, দেখার ইচ্ছে প্রকাশ করে দুজনেই। দিনমত অভি গিয়ে পৌঁছায় কিন্তু দেখা পায় না সারার, ওদিকে সারাও অভির দেখা পাচ্ছে না কিন্তু দুজনেই ঠিক সময়, ঠিক জায়গায় দাড়িয়ে! তাহলে তাদের কি দেখা হবে না? দুজনের মাঝে তফাৎ কিসের? গল্পের টুইস্ট মূলত এখানেই।
অভির চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও সারার ভূমিকায় সাদিয়া আয়মান। অপূর্ব রোমান্টিক কাজগুলোতে বরাবরই নিজের সেরাটা দিয়ে থাকেন, মায়াশালিক এও তার ব্যতিক্রম নয়। দৃশ্য থেকে দৃশ্য, তার সংলাপ বলার ধরন, বলন এবং চলনে যেন নিজেকে আরো মজবুত করেছেন এবং চরিত্রের সাথে সংযুক্ত করেছেন। সাদিয়া আয়মান নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রী কিন্তু কি দারুণ অভিনয় মেয়েটার মধ্যে। একটা টিনেজ মেয়ের চরিত্রে যেরকম ইমোশন দরকার বা একজন টিনেজ যেভাবে নিজেকে গ্রোআপ করতে তার সবটাই দিয়েছেন। এছাড়াও শহীদুজ্জামান সেলিম ও টুনটুনি কে ভালো লেগেছে তাদের চরিত্রে, অতিথি চরিত্রে ইমতিয়াজ বর্ষন দারুন।
রোমান্টিক নাটকে একটা সময় শিহাব শাহীন ছিলেন অদ্বিতীয়, সেই শিহাব শাহীনের থেকে অনেকদিন পর ভিন্ন কিছু পাওয়া তাও রোমান্টিকের সাথে সাই ফাই এড করে, বিষয়টাই ভালো লেগেছে। কন্টেন্টের গল্প যখন স্ট্রং হয় তখন সবকিছু এমনিতেই ভালো লাগতে বাধ্য। শিহাব শাহীনের মায়াশালিকের মূল ইউএসপি ছিল এর গল্প। আমাদের দেশে সাই ফাই নিয়ে কাজ খুবই কম হয়েছে, সেখানে এরসাথে রোমান্টিকতা জড়ানো একদমই ইউনিক বিষয়। কিন্তু দুটো জনরাকে প্রথমার্ধে ও দ্বিতীয়ার্ধে এত সুন্দরভাবে শিহাব শাহীন ব্লেন্ড করেছেন যে ভালো না লেগে উপায় নেই।
'মায়াশালিক' এর মতন গল্প আমাদের দেশের কাজগুলোতে সচরাচর দেখা যায় না। ভিন্ন ধরনের কাজ যারা বছরজুড়ে খুঁজেন তাদের জন্য মায়াশালিক দেখা আব্যশক। অনেকদিন পর শিহাব শাহীন ও অপূর্ব জুটির নতুন কাজ এবং পুরো কাজটাই ভালো লাগবে। ওটিটি প্লাটফর্ম বিঞ্জে দেখুন মায়াশালিক একদম ফ্রি তে...
What's Your Reaction?