ইন্টারনেট স্পীড ডাউনলোড ও আপলোড এর পার্থক্য
ইন্টারনেট স্পীড ডাউনলোড ও আপলোড এর পার্থক্য
যদি কখনো আপনার নেট স্পিড এর উপর কোনো টেস্ট করে থাকেন তাহলে দেখবেন যে সবসময়ই আপনার আপলোড এর থেকে ডাউনলোড স্পিড বেশি আছে । কিন্তু কখনো মনে প্রশ্ন এসেছে কি এটা কেনো হয়? আর এই সমস্যা কি শুধু আপনার সাথেই ঘটছে? জ্বি না। এটা আসপে বিশ্বব্যাপীই ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে। যেমন Speedtest এর একটি রির্পোট অনুযায়ী ২০২২ সালের মার্চ মাসের বিশ্ব এর গড় ইন্টারনেট ডাউনলোড স্পিড (ফিক্সড ব্রডব্যান্ড) ছিলো 98.67 Mbps অন্যদিকে গড় আপলোড স্পিড ছিলো মাত্র 53.22 Mbps । মানে প্রায় অর্ধেক এর চেয়ে একটু বেশি। আপলোড স্পিড কেনো ডাউনলোড স্পিড এর থেকে কম হয় এটা যদি আপনি আপনার ISP (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) কে জিজ্ঞাসা করেন তাহলে তারা বলবে যে আপলোড এর থেকে ডাউনলোড স্পিডের ডিমান্ড বেশি থাকে কাস্টমারদের কাছে। এবং এখানে একটি টেকনিক্যাল লিমিটও রয়েছে। আজ আমি আপনাদেরকে সহজ ভাষায় এই বিষয়টি বুঝিয়ে দেবার চেষ্টা করতেছি।আপলোড স্পিড কম হবার কারণ:
ইন্টারনেট থেকে ইউজার কম্পিউটারের যে রেটে ডাটা ট্রান্সমিট হয় তাকে বলা হয় ডাউনলোড স্পিড। এর উল্টো করলে আপনি পেয়ে যাচ্ছেন আপলোড স্পিড।অর্থাৎ ইউজার কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেটে যে রেটে ডাটা ট্রান্সমিট করা হয় তাকে বলে আপলোড এর স্পিড। ইন্টারনেট কোম্পানি (মোবাইল নেটওর্য়াক সহ) গুলো ডিফল্ট ভাবেই আমাদের ডাউনলোড স্পিড কে আপলোড এর থেকে অনেক বেশি ফাস্ট করে রাখে। এর মূল কারণ হচ্ছে ৯০% গ্রাহক এর আপলোড এর চেয়ে ডাউনলোড স্পিড বেশি হবার প্রয়োজন পড়ে। এই ফিচার এর কারণেই আমরা কোনো কিছু আপলোড করার থেকে তুলনামূলক ভাবে বেশি গতিতেই ডাউনলোড করে নিতে পারি। আবার কিছু কিছু বড়সড় বিজনেস প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের একটু বেশি পরিমাণ এর আপলোড স্পিড এর দরকার হয়ে পরে। তারা এখানে ইন্টারনেট কোম্পানির সাথে আলাপ করে তাদের ডাউনলোড এবং আপলোড স্পিড সমান করে দেয় কিংবা ডাউনলোডের থেকে আপলোড স্পিড একটু বেশি করে থাকে। টেকনিক্যাল ভাষায় একে বলা হয় “symmertrical”। symmertrical টার্ম হচ্ছে ওই অবস্থাকে বলা হয় যেখানে আপলোড এবং ডাউনলোড স্পিডের গতি প্রায় একই হয়ে থাকে, এবং বলাই বাহুল্য যে এই ইন্টারনেট কনফিগারেশন এ খুব কমই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অন্যদিকে আমাদের অধিকাংশ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন কোম্পানি গুলোই টেলিফোন লাইন এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সার্ভিস দিয়ে থাকছে, একে বলা হয় ADSL (Asynchronous Digital Subscriber Line) টেকনোলজি আর এখানে ডাউনলোড স্পিড অনেক বেশি থাকে আপলোড এর স্পিডেল এর থেকে। ধরুণ আপনি ইন্টারনেট লাইন ইউজ করবেন; এখন যে কোম্পানির লাইন ইউজ করবেন তাদের ইন্টারনেট প্যাকেজগুলোর দিকে লক্ষ্য করুন। তাহলে দেখবেন যে তারা বিভিন্ন স্পিড এর ভিক্তিতে তাদের লাইনের নাম এবং চার্জ সেটিং করে থাকে; এদের মধ্যে থাকে Main Speed, BDIX speed, youtube speed, ftp speed ইত্যাদি। এখানে সকল স্পিডই কিন্তু ডাউনলোড স্পিড। যেমন- মেইন স্পিডে আপনার প্যাকেজ এর মূল স্পিড দেওয়া থাকে, যেমন আপনি যদি 3Mbps লাইন ব্যবহার করে তাহলে এই মেইন স্পিডে আপনি পাবেন ৩ মেগাবিট ডাউনলোড স্পিড, BDIX speed মানে বাংলাদেশের ভেতরে আপনি এই সাইটগুলো থেকে বেশ দ্রুত গতিতে “ডাউনলোড” করতে পারবেন। অন্যদিকে youtube এবং ftp এগুলোর যে স্পিড উল্লেখ থাকে সেটাও কিন্তু ডাউনলোড স্পিড। যেমন ইউটিউব দেখার সময় ভিডিওগুলো কিন্তু আপনার ডিভাইসেই অটো ডাউনলোড হয়ে থাকে আপলোড নয়। তাই ইউটিউব থেকে ডাউনলোড স্পিড আপনি খুব বেশি পাচ্ছেন কিন্তু ইউটিউবে ভিডিও আপলোড কিন্তু তুলনামূলক ভাবে কম পাচ্ছেন। তাই ইন্টারনেট প্যাকেজ গুলোতে সাধারণত ডাউনলোড স্পিড দিয়েই সাজানো হয়। আপলোড স্পিড দেওয়া থাকে না। আপলোড স্পিড যদি দেওয়া থাকতো তাহলে নেট প্যাকেজ গুলোর নাম হতো এরকম: 5/1 Mbps 6/1.5 Mbps 10/2 Mbps এই রকম স্পিড প্যাকেজ দিলে সাধারণ আমজনতা দ্বিধায় পরে যাবে এবং এটাই স্বাভাবিক। এখানে ৫ মেগাবিট স্পিড লাইনে আপনি আপলোড স্পিড পাবেন ১ মেগাবিট প্রতি সেকেন্ড এ। একই ভাবে 10Mbps গতির লাইনে আপনি পাচ্ছেন 2Mbps গতির আপলোড স্পিড কিন্তু ইন্টারনেট কোম্পানি গুলো সেটা কখনোই উল্লেখ করে না।What's Your Reaction?