ভারত মহাসাগরের তলদেশে বিশাল গর্ত

ভারতের মহা সাগরের নিচে পাওয়া গিয়েছে একটি বিশাল গর্ত। কেন এই গর্ত? কি হতে পারে এই গর্তের ভিতর?কিভাবেই বা হলো এই গর্ত? তো আসুন এই সম্পর্কের সম্পূর্ণ কাহিনী জেনে আসা যাক। 

ভারত মহাসাগরের তলদেশে বিশাল গর্ত

ভারত মহাসাগরের তলদেশে বিশাল গর্ত

ভারতের মহা সাগরের নিচে পাওয়া গিয়েছে একটি বিশাল গর্ত। কেন এই গর্ত? কি হতে পারে এই গর্তের ভিতর?কিভাবেই বা হলো এই গর্ত? তো আসুন এই সম্পর্কের সম্পূর্ণ কাহিনী জেনে আসা যাক। 

ভারত মহাসাগরের নিচে বিশাল গর্ত। সমুদ্রের মেঝেতে অনেকটা এলাকাজুড়ে তার বিস্তৃতি। দীর্ঘদিন ধরেই এই গর্তটি বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের কেন্দ্রে। শ্রীলংকার ঠিক দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের নিচে এই গর্তটিকে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ বা মধ্যাকর্ষণজাত গর্ত বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ টানের কারণে গর্তটি তৈরি হয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। ভারত মহাসাগরের ‘গ্র্যাভিটি হোল’-এর বিস্তৃতি বিশাল। প্রায় ৩০ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই গর্তটি তৈরি হয়েছে। সমুদ্রের সবচেয়ে নিচের স্তরটির চেয়েও এই অঞ্চলটি গভীর। গর্তটিকে ঘিরে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন অনেকে। সমুদ্রের নিচে বিশাল অংশজুড়ে এই গর্তের কারণে অনেকের ধারণা, সমুদ্রের তলদেশ হয়তো নিচের দিকে বসে যাচ্ছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি, আনন্দবাজার পত্রিকা। এই গর্ত থেকে আগামী দিনে পৃথিবীর উপরিভাগের কোনো ক্ষতি হতে পারে কি-না, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে এই গর্তের কোনো সম্পর্ক আছে কি-না, তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছিল। পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল মহাকর্ষ বলের টানে সমুদ্রতলের কোনো অংশ নিচের দিকে বসে গেলে ‘গ্র্যাভিটি হোল’-এর সৃষ্টি হয়। ভারত মহাসাগরের নিচেও তা হয়েছে। কেন ভারত মহাসাগরের নিচে এই বিশাল গর্ত তৈরি হলো, তার সম্ভাব্য কারণ আবিষ্কার করেছেন দুই ভারতীয় বিজ্ঞানী। বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের গবেষক দেবাঞ্জন পাল এবং আত্রেয়ী ঘোষ। ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস’ নামক জার্নালে দেবাঞ্জন এবং আত্রেয়ীর গবেষণামূলক তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে। কেন ভারত মহাসাগরের মাঝে ‘গ্র্যাভিটি হোল’ তৈরি হলো তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন তারা। গবেষকদের দাবি, পৃথিবীর আকার একটি নিখুঁত গোলকের মতো বলে মনে করা হলেও আসলে পৃথিবী তেমন নয়। পৃথিবীপৃষ্ঠ কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু, কোনো অংশ একটু বেশি সমতল। ভারত মহাসাগরে তৈরি ‘গ্র্যাভিটি হোল’ আক্ষরিক অর্থে তেমন ‘গর্ত’ নয়, যা সমুদ্রের জল কমিয়ে দেয় বা শুষে নেয়। বরং এটি ভূত্বকের একটি অসঙ্গতিপূর্ণ স্থান, যেখানে পৃথিবীর মধ্যাকর্ষ টান অপেক্ষাকৃত দুর্বল। গবেষকরা কম্পিউটার মডেলের মাধ্যমে পৃথিবীপৃষ্ঠটিকে বিশ্লেষণ করেছেন। মধ্যাকর্ষণজাত এই গর্তকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তারা। ১৪ কোটি বছর ধরে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভূপ্রকৃতিগত পরিবর্তন বিবেচনা করে দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এই ‘গ্র্যাভিটি হোল’-এর কারণে পৃথিবীর মহাদেশীয় এবং মহাসাগরীয় পাতগুলো বেশ কিছুটা সরে গিয়েছে। ভারত মহাসাগরের কেন্দ্রস্থলে দুর্বল মধ্যাকর্ষণ টানের কারণ হিসাবে ভূত্বকের নিচে পৃথিবীর ম্যান্টেল স্তরের গলিত ম্যাগমাকে দায়ী করা হচ্ছে। এই ম্যাগমাই দুই কোটি বছর আগে পৃথিবীর আকৃতি গড়ে দিয়েছিল। ভূত্বকের নিচ দিয়ে দুই কোটি বছর ধরে বয়ে চলেছে এই তরল তপ্ত। ম্যাগমা স্রোত যদি কখনো থমকে যায়, ভারত মহাসাগরের তলদেশে তৈরি হওয়া গর্তটিও মিলিয়ে যাবে।

অন্যদিকে ভারত চাঁদে নভোযান পাঠানোর দুই সপ্তাহ পেরোনোর আগেই সূর্যের কক্ষপথে নতুন নভোযান আদিত্য-এল ১ পাঠাচ্ছে ভারত। আজ শনিবার বেলা ১১ টা ৫০ মিনিটে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশে যাত্রা করবে সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই নভোযান। আমাদের এই সৌরজগতের প্রাণকেন্দ্র সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব ১৪ কোটি ৯৬ লাখ কিলোমিটার। পৃথিবী থেকে উড়াল দেওয়ার পর ১৫ লাখ কিলোমিটার পর্যন্ত যাবে আদিত্য-এল ১, শতকরা হিসেবে যা পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের ১ শতাংশ পথ। এই অভিযানের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইসরো জানিয়েছে, এই পথ পাড়ি দিতে আদিত্য-এল ১ সময় নেবে চার মাস। সংস্কৃত ভাষায় সূর্যের আরেক নাম আদিত্য। সূর্যের কক্ষপথের উদ্দেশে পাঠানো নভোযানটির নাম তাই সূর্যের নামেই রাখা হয়েছে; আর এল ১ আসলে লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট ১’র সংক্ষিপ্ত রূপ। পৃথিবী থেকে রওনা হয়ে ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর যেখানে গিয়ে থামবে আদিত্য, সেই এলাকাটিকেই সূর্যের লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট বলে উল্লেখ করেছে ইসরো। ইউরোপের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সংজ্ঞানুযায়ী, লেগ্রেঞ্জ পয়েন্ট হলো মহাবিশ্বের এমন একটি এলাকা,যেখানে দুই বৃহৎ বস্তু, যেমন সূর্য ও পৃথিবীর মহাকর্ষীয় শক্তি পরস্পরকে বিকর্ষণ করে। আদিত্য-এল ১ যদি তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে, তাহলে পৃথিবী যে গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে— সেই একই গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম হবে আদিত্যও। ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো জানিয়েছে, শ্রীহরিকোটার লঞ্চপ্যাড থেকে উৎক্ষেপণের পর লেগ্রেঞ্জ পয়েন্টে যাওয়ার আগে বেশ কয়েকবার পৃথিবীর কক্ষপথে পরিভ্রমণ করবে আদিত্য-এল এতে সূর্যের কক্ষপথে পৌঁছাতে সুবিধা হবে নভোযানটির। এছাড়াও মহাসাগর বলুন নিশ্চয়ই এমন অনেক কিছু পাওয়া যায় যেগুলো আমাদের সম্পূর্ণ অজানা। সেগুলো আমাদের জন্য অনেক ভালো হতে পারে আবার অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow