বিদ্যা বালান এর জীবনী 

বিদ্যা বালান ১ জানুয়ারি ১৯৭৮ সালে ভারতের কেরালার পালক্কাদ জেলার পুথামকুরুসি, পুথুর শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা-মাতা তামিলিয় বংশোদ্ভুত; পিতা পি আর বালান ডিজিক্যাবল প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী সহ-সভাপতি এবং মাতা স্বরসতী বালান গৃহিণী। বিদ্যার ভাষ্যমতে তার পিতা-মাতা বাড়িতে মালয়ালম এবং তামিল ভাষা ব্যবহার করতেন। তার কনিষ্ঠ বোন প্রিয়া বালান বিজ্ঞাপন ক্ষেত্রে কাজ করছেন।

বিদ্যা বালান এর জীবনী 

 বিদ্যা বালান এর জীবনী 

বিদ্যা বালান ১ জানুয়ারি ১৯৭৮ সালে ভারতের কেরালার পালক্কাদ জেলার পুথামকুরুসি, পুথুর শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা-মাতা তামিলিয় বংশোদ্ভুত; পিতা পি আর বালান ডিজিক্যাবল প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী সহ-সভাপতি এবং মাতা স্বরসতী বালান গৃহিণী। বিদ্যার ভাষ্যমতে তার পিতা-মাতা বাড়িতে মালয়ালম এবং তামিল ভাষা ব্যবহার করতেন। তার কনিষ্ঠ বোন প্রিয়া বালান বিজ্ঞাপন ক্ষেত্রে কাজ করছেন। অভিনেত্রী প্রিয়মণি তার কাকার মেয়ে। বিদ্যা মুম্বইয়ের চেম্বুর উপ-শহরে বেড়ে উঠেন এবং সেন্ট এন্থনি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন।তরুণ বয়স থেকেই অভিনেত্রী শাবানা আজমি ও মাধুরী দিক্ষিতের দ্বারা প্রভাবিত হবার কারণে চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহী ছিলেন তিনি। ষোল বছর বয়সে, তিনি একতা কাপুর পরিচালিত হাম পাঞ্চ সাইটকমের প্রথম সিজনে রাধিকা নামে এক তরুণীর চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ধারাবাহিকের সাফল্যের পর, তিনি অনুরাগ বসু নির্দেশিত টেলিভিশন সোপ অপেরার আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেন চলচ্চিত্র পেশায় মনোযোগী হতে চান বলে।বিদ্যার পিতা-মাতা তার এ সিদ্ধান্তে সম্মত থাকলেও তারা প্রথমে পড়াশুনা শেষ করার বিষয়ে উৎসাহ যোগান দিতেন, তাই তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বর্ষে অধ্যয়ন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।  ২০০১ সালে, প্রধান নারী চরিত্র হিসেবে এন. লিঙ্গুস্বামী পরিচালিত রান ২০০২ চলচ্চিত্রে কাজ করেন। যদিও, চলচ্চিত্রের প্রথম শুটিং সম্পন্ন হবার পরই অনানুষ্ঠানিকভাবে বাদ পড়েন তিনি এবং তার পরিবর্তে মীরা জেসমিন এতে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি তৃতীয় তামিল চলচ্চিত্র মানাসিলামে ২০০৩ চুক্তিবদ্ধ হন কিন্তু পরিচালক অসন্তুষ্ট হয়ে তার পরিবর্তে তৃষা কৃষাণকে পুনস্থাপিত করেন। কালারি বিক্রামান, আরেকটি মালয়ালম চলচ্চিত্র যার কাজ তিনি ২০০৩ সালে সম্পন্ন করলেও প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে এটি ব্যর্থ হয়। চলচ্চিত্র কর্মজীবনের শুরুতে একাধিক ব্যর্থতার পর, বিদ্যা আনুমানিক ষোলটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে এবং ইউফোরিয়া ও সুভা মুডগালের মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন; যার অধিকাংশই প্রদীপ সরকার কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে। ২০০৩ সালে, তিনি গৌতম হালদার পরিচালিত ভাল থেকো বাংলা চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন; যা ছিল তার বাংলায় প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। যেখানে তিনি আনন্দী নামে এক কমবয়সী নারী চরিত্রে অভিনয় করেন যা তাকে তার অতীত স্মৃতিচারণ করিয়ে দেয় এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য আনন্দলোক পুরস্কার এনে দেয়। ২০০৫ সালে, প্রদীপ সরকার পরিচালিত সঙ্গীত নাট্য পরিণীতা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটান বিদ্যা। এই চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করার পূর্বে তাকে ছয় মাসবাপী দীর্ঘ মহড়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।চলচ্চিত্রটি বাঙালি লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে যা একটি আদর্শবাদী নারী ললিতা বিদ্যা ও পূঁজিবাদী ব্যবসায়ী পুত্র সঙ্গীতঙ্গ শেখরের সাইফ আলী খান মধ্যকার সম্পর্কের গল্প বর্ণনা করে। এ চলচ্চিত্রে বিদ্যার অভিনয় সমালোচকদের সন্তুষ্ট করে; ভ্যারাইটি সাময়িকীর ডিরেক এলে এ সম্পর্কে প্রশংসাসূচক বাক্য লিখেছেন। পরিণিতা বছরের শেষে তাকে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ নারী অভিষেক পুরস্কার এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়োন এনে দেয়। পরবর্তী বছর, বিদ্যা রাজকুমার হিরানী পরিচালিত লাগে রাহো মুন্না ভাই কমেডি চলচ্চিত্রে সঞ্জয় দত্তের বিপরীতে উপস্থিত হন। চলচ্চিত্রে তিনি জাহ্নবি নামে এক রেডিও জকির চরিত্রে অভিনয় করেন। এই চরিত্রে পারদর্শী হতে তিনি এক বেতার দম্পতির সাথে সাক্ষাত করেন এবং কিছুকাল তাদের কাজ পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে এ বিষয়ে পারদর্শীতা অর্জন করেন। পরবর্তীতে তার অভিনয় সমালোচিতভাবে গৃহীত হয় এবং চলচ্চিত্রটি ব্লকবাস্টার হিটের পাশাপাশি প্রায় ১.১৯ বিলিয়ন উএস$ ১৮ মিলিয়ন রুপীর ব্যবসা করে। হেই বেবি ও কিসমত কানেকশন চলচ্চিত্রে তার অভিনীত চরিত্রের "প্রশ্নসাপেক্ষ পোশাকভান্ডার" গণমাধ্যমের মনোযোগ আকর্ষন করে। পরবর্তীতে পাবলি অনুষ্ঠানসমূহে শাড়ি পরিধানের জন্য তিনি গণমাধ্যমে প্রশংসিত হন; ডিজাইনার নিহারিকা খান বর্ণনা করেন, "বিদ্যার সৌন্দর্য তার শরীরের বাঁকে-বাঁকে। বিদ্যার স্বস্তি তার ইন্দ্রিয়সুখাবহে এবং এ কারণেই শাড়িই তার পছন্দ।" বিদ্যা পরিচিত "যৌনতার ইংরেজিকরণ" এবং "খাঁটি ভারতীয় যৌনতার" প্রতিচ্ছবি হিসেবে। পা, ইশকিয়া, নো ওয়ান কিলড জেসিকা, দ্য ডার্টি পিকচার এবং কাহানি চলচ্চিত্রে শক্তিশালী নারী প্রধান চরিত্র অভিনয় করার পর, বিদ্যা বলিউডে নায়িকাদের গদবাঁধা প্রতিকৃতির ভাঙ্গনে আন্দোলনে জন্য দিয়েছেন। তার শেষ দুটি প্রধান বাণিজ্যিক সাফল্যের একটি হল "ফিমেল হিরো" নাম অর্জন। এবং ফার্স্ট পোস্টের কল্পনা নায়ার উল্লেখ করেন যে এই দুটি চলচ্চিত্রে বিদ্যা তার চরিত্র অগ্রণী ভূমিকা রাখেন যা সাধারণত ত্রিশউদ্ধো অভিনেত্রীদের দেওয়া হয়। বিদ্যা পরপর দুই বছর ২০১০–১১ রিডিফ.কম কর্তৃক তাদের বাৎসরিক "বলিউডের শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী" হিসেবে শীর্ষ সারিতে অবস্থান নিয়েছিলেন। পরবর্তী বছর, রাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সম্মানসূচক ডক্টর অব আর্টস গ্রহণ করেন; এছাড়াও এ তার চলচ্চিত্র ভারতীয়তা এবং শক্তিশালী নারী ভ্রাতৃত্ববোধের প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম বিদ্যার চলচ্চিত্র পুরষ্কারের মধ্যে দ্য ডার্টি পিকচার ২০১১ চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য একটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, এবং পাঁচটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার: পরিণীতা ২০০৫ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী অভিষেক, পা ২০০৯, দ্য ডার্টি পিকচার ২০১১, ও কাহানি ২০১২, চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী, এবং ইশ্‌কিয়া ২০১০ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জন্য সমালোচক পুরস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।



What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow