বিকাশ থেকে রকেটে টাকা যাবে কবে থেকে

বিকাশ থেকে রকেটে টাকা যাবে কবে থেকে

বিকাশ থেকে রকেটে টাকা যাবে কবে থেকে

সব প্রস্তুতি নিয়ে নিলেও বাংলাদেশ ব্যাংক মুঠোফোনের আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান গুলোর একটির সাথে আরেকটির পারস্পরিক লেনদেন এর প্রক্রিয়া, অর্থাৎ এক এমএফএস থেকে অন্য এমএফএসে টাকা পাঠানোর সেবা চালু করতে পারেননি। যদিও ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ এর (এনপিএসবি) মাধ্যমে বিকাশ টু রকেট, বিকাশ/রকেট টু ব্যাংক—এভাবে টাকা স্থানান্তর এর এই সেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সে অনুযায়ী ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেবাটি চালুর কথা ছিলো।   এখন কবে নাগাদ সেই সেবাটি চালু হবে, তা বলতে পারছে না আর্থিক খাত এর নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ফলে বিকাশ, রকেট, এম ক্যাশ, উপায় এর গ্রাহকগণ একে অপর এর মাঝে লেনদেন করতে পারছেন না। আবার সব ব্যাংক এর সাথেও লেনদেন করা যাচ্ছে না। এদিকে একই ধরণের সেবা চালুর জন্য সরকার এর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ জন্য ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে তারা সমঝোতা চুক্তি সই করেছে। এরপর ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে চারটি প্রতিষ্ঠান এর কাছ থেকে ইন্টার-অপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম (আইডিটিপি) সেবা নিতে ৫৪ কোটি ৯৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৯ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে অরিয়ন ইনফরম্যাটিকস লিমিটেড, মাইক্রোসফট বাংলাদেশ লিমিটেড, ফিনটেক সলিউশন লিমিটেড ও সেইন ভেঞ্চারস লিমিটেড (জেভি)। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর পরিবর্তে আইডিটিপির মাধ্যমে এই সার্ভিসটি চালু হবে। তবে সেবাটি থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে থাকবে। বিনিময় অ্যাপ এর মাধ্যমে মিলবে সেবাটি। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ইতিমধ্যে আইডিটিপি সেল গঠন করা হয়েছে। কার্যাদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ এগিয়েও নিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু সেবাটি চালু নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক এর নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চূড়ান্ত করলেও সেবাটি চালু করতে পারিনি। একই ধরনের সেবা চালুর জন্য সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ বেশ কিছু চাহিদা দিয়েছে। নতুন প্রকল্পও নেয়াও হয়েছে, যাতে আরও অনেক সেবা যুক্ত হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে সার্ভিসটি।’ সেবাটির পরিধি নিয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, আইডিটিপি ডিজিটাল অর্থনৈতিক লেনদেন এর ক্ষেত্রে আন্তবিনিময় যোগ্যতা, কম খরচ, নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন লেনদেনে অংশগ্রহণকারী গ্রাহক, মার্চেন্ট, অর্থ প্রদানকারী ও গ্রহণকারী, পেমেন্ট প্রসেসর, ই-ওয়ালেট, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেনের সেতুবন্ধন তৈরি করবে। এটি হবে একটি প্ল্যাটফর্ম সেবা, যার অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস বা এপিআই ব্যবহার করে অর্থ লেনদেন, স্থানান্তর, ই-কমার্স, এম কমার্স, বিল পেমেন্ট, মার্চেন্ট পেমেন্ট, রেমিট্যান্স আদান-প্রদান, মেশিন টু মেশিন পেমেন্ট করা যাবে। এটি বাস্তবায়ন হলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হবে, যা ক্যাশ লেস সোসাইটি তথা নগদ লেনদেনবিহীন সমাজ গঠনে সহায়ক হবে। বর্তমানে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানো যায়। কিন্তু এক এমএফএস থেকে অন্য এমএফএসে টাকা পাঠানো যায় না। তবে ব্যাংক থেকে এমএফএসে ও এমএফএস থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানো সীমিত আকারে চালু হয়েছে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow